আজ চৈত্র মাসের শেষ দিন, চৈত্রসংক্রান্তি


Ismail Hossain প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৩, ২০২৩, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন /
আজ চৈত্র মাসের শেষ দিন, চৈত্রসংক্রান্তি

দিনে দিনে বর্ষ হলো গত—শেষ হয়ে এল আরও একটি বছর। মহাকালের গর্ভে বিলীন হতে চলল বঙ্গাব্দ ১৪২৯। আজ বৃহস্পতিবার বছরের শেষ দিন ৩০ চৈত্র। বাংলা সালের শেষ দিনটি নানা আচার আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘চৈত্রসংক্রান্তি’ হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।

বছরের শেষ দিনে অনেকেই বাড়িঘর বিশেষভাবে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করে থাকেন। আবর্জনা পুড়িয়ে বাড়ির আশপাশে ধোঁয়া দেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই বাড়ির আঙিনায় বা ঘরের বারান্দায় মাঙ্গলিক আলপনা আঁকেন। সমাগত নতুন বছরটিতে বিগত বছরের সব অকল্যাণ, বিপদ–আপদ, রোগ–শোক থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থাকে এসব আয়োজনে।

খাবারেও বিশেষত্ব থাকে চৈত্রসংক্রান্তিতে। আগের দিনে তিক্ত স্বাদের শাক রান্না হতো এই দিনে। এসব শাক হাট–বাজার থেকে কেনা নয়, বউ–ঝিরা বাড়ির আশপাশের ঝোপ–জঙ্গল, ভিটেজমি থেকে সংগ্রহ করতেন। সাত বা এগারো রকম তিক্ত শাকের মিশেলে এই বিশেষ ধরনের রান্না স্বাদে যেমন বৈচিত্র্য আনে, তেমনি গ্রীষ্মের মৌসুমি রোগ–ব্যাধির প্রতিরোধক্ষমতা সৃষ্টি করে। সে কারণে সংক্রান্তির এসব খাদ্য রোগব্যাধির প্রতিকার হিসেবেও কাজ করে। এখন আধুনিক জীবনযাত্রায় শহরে তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও ঔষধি গুণসম্পন্ন বহু গাছ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এসব রান্নার চলও উঠে গেছে।

এ ছাড়া চৈত্রসংক্রান্তিতে দেশের অনেক এলাকায় চড়ক ও নীলপূজার আয়োজন করা হতো। চড়কপূজা উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী লোক ও কারুশিল্প এবং মিষ্টান্নের পসরা সাজিয়ে গ্রামীণ মেলা বসত। এখনো কিছু কিছু এলাকায় চড়কপূজার চল রয়েছে।

নগরজীবনে চৈত্রসংক্রান্তি মূলত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক। বছরের শেষ দিনের সন্ধ্যায় রাজধানীতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তির অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তবে এবার পবিত্র রমজান মাস চলতে থাকায় চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন কম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আজ সন্ধ্যায় চৈত্রসংক্রান্তির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। চারুকলার শিক্ষার্থীরাই এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত।