বেশি খাদ্য মজুতে যাবজ্জীবন, আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন


admin প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১০, ২০২৩, ৬:৫১ অপরাহ্ন /
বেশি খাদ্য মজুতে যাবজ্জীবন, আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

ডেস্কঃ কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুতসংক্রান্ত সরকারের নির্দেশনা অমান্য করলে সেটি অপরাধ হবে। আর এ জন্য সর্বোচ্চ সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এ ছাড়া অর্থদণ্ডও হতে পারে। তবে অর্থদণ্ড নির্ধারণ করবে আদালত।

এমন বিধান রেখে ‌‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩’–এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

প্রস্তাবিত আইনে খাদ্যদ্রব্য মজুতের ওপর বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুতসংক্রান্ত সরকারের নির্দেশনা অমান্য করলে সর্বোচ্চ সাজা পাবেন। অবশ্য শর্ত হিসেবে আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, এসব অপরাধে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে লাভবান হওয়ার জন্য মজুত করেননি, তাহলে তাঁর অনধিক তিন মাস কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড হবে।

খাদ্যের মজুত নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলেও সাজা পেতে হবে। এ বিষয়ে প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন সম্পর্কে কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ ও বিতরণ করলে ৫ বছর কারাদণ্ড বা ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

প্রস্তাবিত আইনে উৎপাদন ও বিপণনসংক্রান্ত অপরাধের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই রূপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করলে বা খাদ্যদ্রব্যের স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিক অপসারণ বা পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করলে সেটি অপরাধ হবে। এ ছাড়া খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশ্রণ করে উৎপাদন ও বিপণন করলে সেটিও হবে অপরাধ। লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে চললেও তা অপরাধ হবে। আর এসব অপরাধের জন্য ২ বছর কারাদণ্ড অথবা অন্যূন ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে হবে।

এ রকমভাবে বিভিন্ন অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সাজার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া মন্ত্রিসভার আজকের বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ডেইরি বোর্ড আইন, ২০২৩’–এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই আইন জাতীয় সংসদে পাস করলে ডেইরিসংক্রান্ত বিষয়গুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড নামে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান হবে। পদাধিকার বলে এই বোর্ডের প্রধান হবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী। এই বোর্ডের মোট সদস্যসংখ্যা হবে ১৯। সরকারি ও বেসরকারিভাবে যারাই বাণিজ্যিকভাবে দুধ উৎপাদন করবে বা দুগ্ধজাত খাদ্য উৎপাদন করবে, তাদের সবাইকে এই বোর্ডের আওতায় আসতে হবে।